একমাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ
_(2)-2023-05-18-16-49-37.jpg)
একমাসের ব্যবধানে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম হয়েছে দ্বিগুণ। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব বলছে, বাজারে এখন দেশি ও আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দর ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা এক মাস আগেও ছিল ৩০ থেকে ৪৫ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে বাজার ফিরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে ‘পানির দামে বিক্রি’ করে আক্ষেপ উৎপাদনকারী কৃষকদের মাঝে।
দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে, রয়েছে মজুতও। বাজারে সরবরাহও অনেকটা স্বাভাবিক। কিন্তু ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানি বন্ধ, এই অজুহাতে প্রতিদিনই বাড়ছে সংসারের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম। মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অন্যতম বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮২ টাকা। অথচ ১৫ দিন আগে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং মাসখানেক আগেও বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায়। আমদানি বন্ধের অজুহাতে প্রায় প্রত্যেক দিনই বেড়েছে পণ্যটির দাম।
ভোক্তাদের অভিযোগ, সরবরাহ ও মজুত ঠিক থাকলেও সিন্ডিকেটের কারণে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এমতাবস্থায় নাভিশ্বাস উঠেছে ভোক্তাদের। শীঘ্রই প্রশাসনের নজরদারি বাড়িয়ে পেঁয়াজের দামের লাগাম টানতে হবে। না হলে কৃত্রিম সংকট তৈরি হবে এবং আরও বাড়তে থাকবে পণ্যটির দাম। যদিও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হওয়ায় ভারত থেকে আমদানি বন্ধ রেখেছে সরকার। গত ১৫ মার্চ থেকে আমদানি অনুমতিপত্র দিচ্ছে না সরকার। চাহিদার পুরোটা মেটানো হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ দিয়ে।
আবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৩০ লাখ টন। গত অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৬ লাখ টন। এ হিসেবে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হয়েছে। তারপরও অজানা কারণে পণ্যটির দাম বাড়তির দিকে রয়েছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ভারত ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এজন্য দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সরকার আমদানির অনুমতি দিলে বাজার স্বাভাবিক হবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, শীঘ্রই বাজার তদারকিতে দু'জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে নামবেন। বাজারে সাপ্লাই চেইনে কোনো ঘাটতি আছে কি না দেখবেন তারা। এরপর যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে। আমদানি বন্ধ, এটা একটা অজুহাত। আমার ধারণা, এক্ষেত্রে হয়ত আমদানিকারকদের একটা যোগসাজশ থাকতে পারে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: